চার জেলা পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও মানিকগঞ্জে বন্যা এবং নদীভাঙনের ফলে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে ১ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ২৫ জানুয়ারি একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন তিনি।
এটিসহ মোট ১০টি প্রকল্প এদিন অনুমোদন করে একনেক। প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬২১ কোটি টাকা। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ফ্লাড অ্যান্ড রিভারব্যাংক ইরোশন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (প্রকল্প-২) শীর্ষক প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮০৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৩২৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ঋণ হিসেবে দেবে। প্রকল্প সহায়তা হিসেবে নেদারল্যান্ডস সরকার দেবে ১৫১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বাকি অর্থের জোগান দেবে সরকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০২৫ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
বেড়া, শাহজাদপুর, বেলকুচি, চৌহালি, টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দৌলতপুর, হরিরামপুর, শিবালয় উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য কাঠামোগত পরিবর্তন ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বন্যা ও নদীভাঙন ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করে পদ্মা ও যমুনা পাড়ের মানুষের জীবিকা উন্নত করা। প্রকল্পের মূল কাজের মধ্যে আছে ৩০ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ, ৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ, ৪০ কিলোমিটার অ্যাডাপটেশন ও ৬ কিলোমিটার জরুরি কাজ। ৩ কিলোমিটার বাঁধ ব্যবস্থাপনাও করা হবে প্রকল্পের আওতায়।
এদিন সব মিলিয়ে যে দশটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়েছে, সেগুলোর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে সংস্থান হবে ৩ হাজার ৫৫ কোটি ২১ লাখ এবং বৈদেশিক ঋণ পাওয়া যাবে ১ হাজার ৫৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা। অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে এদিন ৭২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ইউরিয়া ফরমালডিহাইড-৮৫ প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প’ও অনুমোদন দেওয়া হয়। একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে নেত্রকোনা-বিশিউড়া-ঈশ্বরগঞ্জ সড়ক প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২২০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ৫৯ কোটি ২১ লাখ, ১৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ প্রকল্পে ৪১ কোটি ৪০ লাখ, শেখ হাসিনা সেনানিবাস বরিশাল স্থাপন প্রকল্পে ৩৩১ কোটি ১০ লাখ, ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পে ১০৬ কোটি ৮ লাখ, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পে ২০০ কোটি ৫৪ লাখ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, গাজীপুরের অ্যাপ্রোচ সড়ক প্রশস্তকরণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ৩ কোটি ২ লাখ এবং গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, রংপুর, জামালপুর ও যশোর জেলায় বিটাকের ৬টি কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৩২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।