নদী রক্ষায় সঠিক নিয়মে ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই

0
20

নদী এ দেশের রক্তনালি। নদী না থাকলে জীবন-জীবিকা, জীববৈচিত্র্য এবং সংস্কৃতি কিছুই থাকবে না। নদীকে তাই বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এজন্য সঠিক নিয়মে নদী খননের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

১৮ নভেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নদী রক্ষায় প্রয়োজন সঠিক নিয়মে নদী খনন’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, নদী ড্রেজিংয়ের সময় যেনতেনভাবে যেখানে সেখানে বালু ফেলা হয়। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর পাড় ভেঙে যায়। তাই অবৈধভাবে কাউকে বালু উত্তোলন করতে দেবেন না। জেলা প্রশাসকদেরও এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পানিসম্পদ ও নদীর গতিপথ স্বাভাবিক রাখতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এজন্য বদ্বীপ পরিকল্পনা করা হয়েছে। এরই মধ্যে সারা দেশে খাল খননে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ভাটির দেশ হওয়ায় প্রতি বছর উজান থেকে দুই বিলিয়ন কিউবিক মিটার পলি চলে আসে। এতে নদী ভরাট হয়ে যায়। এর ফলে বর্ষায় নদীর পানি ধারণক্ষমতা কমে যায়। এক বছর ড্র্রেজিং করলে পরের বছর নদী ভরাট হয়ে যায়। বড় বড় নদী ৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার প্রশস্ত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাÑযতটুকু টেকনিক্যালি দরকার ততটুকু ড্রেজিং করে বাকি জায়গায় কৃষি বা বনায়ন করতে হবে। কিন্তু এ জায়গায় কোনো অবকাঠামো করতে দেয়া যাবে না।

জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, আমরা ৫০ হাজার নদী দখলদারের তালিকা তৈরি করেছি। এরই মধ্যে দখল হওয়া ৩২ শতাংশ জমি উদ্ধার হয়েছে। অবৈধভাবে নদী দখল প্রতিরোধে আমরা সোচ্চার রয়েছি। কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না। নদী কমিয়ে নদীর উন্নয়ন নয়। দৈর্ঘ্য, প্রস্থের হিসাব ও আনুপাতিক হিসাব রেখে নদী খনন করতে হবে। নদীপাড়ের জমি স্থায়ী বসতি করার জন্য লিজ দেয়া যাবে না।

আলোচনায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীর গুরুত্ব অনুধাবন করে চার হাজার কিলোমিটার নদীপথকে ১০ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমান সরকার নদী খননে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে বর্ষাকালে নদীপথ ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। নদী খনন পরিকল্পনায় আরো যতœশীল হতে হবে। নদীর বহমান ¯্রােতধারা, ভৌগোলিক বিষয়, নদীর চরিত্র, আবহাওয়ার বিষয় আমলে নিয়ে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা যাচাই করে প্রকল্প  বাস্তবায়ন করতে হবে। নদীর তলদেশ খননের একটি নিয়মনীতি প্রণয়ন করা দরকার। দশমিক শূন্য তিন মিটারের অধিক নদী খনন করলে সেখানে নদীর ক্ষতির কারণ হয়। এজন্য জরিমানা আদায়ের বিধান রাখা যেতে পারে।

সেই সাথে সরকারের একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা প্রয়োজন, যেখানে নদী গবেষক, স্বনামধন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টেকনিক্যাল পরামর্শক, প্রফেসরসহ স্টেকহোল্ডার, ড্রেজার মালিক সমিতির সদস্য ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা থাকবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here