বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
29 C
Dhaka

বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

নদীর বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব

উচ্চ আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। অতএব এই সত্তার ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকারগুলো নিশ্চিত করা সরকারসহ আমাদের সবার দায়িত্ব। তাছাড়া নদী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার তার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তাই নদী দখলের ঘটনা তাঁর নজরে আনলেই এগুলো বন্ধ হবে বলে মনে করেন পরিবেশবাদী ও বিশিষ্টজনেরা।

১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে এর আগের দিন ১৩ মার্চ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিক সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, জাতীয় নদী জোট ও জাতীয় নদী রক্ষা আন্দোলন। ওই সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপস্থিতরা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদের বড় অংশজুড়ে রয়েছে নদী। একে ঘিরেই আমাদের সভ্যতা গড়ে উঠেছে। এমনকি শিল্প-সংস্কৃতিও গড়ে উঠেছে নদীকে কেন্দ্র করেই। তাই এ প্রকৃতিকে আমাদের বাঁচাতে হবে।

আমাদের দেশে নদী রক্ষায় চমৎকার আইন থাকার পরও কেন আমরা নদী রক্ষা করতে পারছি না, সেই প্রশ্ন তোলেন জাতীয় নদী জোটের আহ্বায়ক শারমীন মুরশিদ। তিনি বলেন, নদী উদ্ধার করা হয়, আবার সেগুলো দখল হয়ে যায়। একটি দখলদারকে উচ্ছেদ করতে সারা বছর লেগে যায়। অথচ প্রভাবশালীদের কারণে আবার তা দখল হয়ে যায়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও পরিতাপের বিষয়।

বাপার সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বাপার কার্যনির্বাহী সহসভাপতি ডা. মো. আবদুল মতিন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের এক সরকারি গবেষণা মতে, আমাদের দেশে কলকারখানাগুলোই হচ্ছে নদীদূষণের প্রধান উৎস। এসব থেকে নানা রকম বিষাক্ত তরল দূষক পরিবেশের সীমাহীন ক্ষতি সাধন করছে। বিশ^ব্যাপী পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রমাণিত ৯টি জৈব দূষক ১৯৯৮ সালে নিষিদ্ধ হলেও এর সাতটি বাংলাদেশে এখনো ব্যবহার হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নদী রক্ষায় বারবার তার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন উল্লেখ করে আবদুল মতিন বলেন, আমাদের উচ্চ আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। অতএব এই সত্তার ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকারগুলো নিশ্চিত করাও সরকার ও আমাদের সবার দায়িত্ব।

সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু দাবিও তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑউচ্চ আদালতের রায়ের ভিত্তিতে সব নদীর সীমানা নির্ধারণ, নির্মোহভাবে দখলদার উৎখাত ও তা দখলমুক্ত রাখা; নদী নামক জীবন্ত সত্তার অধিকার নিশ্চিত করা; নদীতে ‘বাঁধ-ব্যারাজ-রেগুলেটর বসানোর বেষ্টনীনীতি’ভিত্তিক নদী ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম, মৃত ও ভরাট হয়ে যাওয়া নদী খনন করে তার প্রবাহ ও নাব্যতা পুনরুদ্ধার করা, সব শিল্প-কারখানায় বর্জ্য পরিশোধনাগার সংযোজন ও এর বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত করা; শহুরে গৃহস্থালি ও হাসপাতাল বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধ করা ও তরল বর্জ্য পরিশোধন বাধ্যতামূলক করা; নৌযানে নির্গত ময়লা, বর্জ্য, তেল পানিতে ফেলা নিষিদ্ধ করা এবং নৌযানে তেলের পরিবর্তে গ্যাস বা সোলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here