২০২৬-২০২৭ মেয়াদে আইএমও কাউন্সিলের ক্যাটাগরি সি-এর সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। ৭ এপ্রিল লন্ডনে আইএমও ডেলিগেটস লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে আইএমও মহাসচিব আর্সেনিও ডমিঙ্গুয়েজ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, স্থায়ী প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ থেকে উপস্থিত ছিলেন হাইকমিশনার এবং আইএমওতে স্থায়ী প্রতিনিধি আবিদা ইসলাম, ডেপুটি হাইকমিশনার হযরত আলী খান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম, কাউন্সেলর (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স) এবং বিকল্প স্থায়ী প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন কাজী এ বি এম শামীম এবং কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মৌমিতা জিনাত।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বাংলাদেশের সামুদ্রিক ঐতিহ্য, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৌশলগত অবস্থান এবং বিশ^ বাণিজ্যে ক্রমবর্ধমান ভূমিকা তুলে ধরেন। প্রতি বছর ৫ হাজারের বেশি জাহাজসহ ৯৫টি সমুদ্রগামী এবং ২০ হাজারের বেশি উপকূলীয় জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে আসে। টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়নের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে তিনি আইএমওর কার্বনমুক্তকরণের যে লক্ষ্য, তার প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেন। সেই সাথে জাহাজ রিসাইক্লিং দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিয়ে আসছে বলে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ ১২০ জনের অধিক নারীসহ ২১ হাজারের বেশি প্রশিক্ষিত নাবিক নিয়ে সমুদ্র নিরাপত্তা, নাবিক কল্যাণ এবং জেন্ডার অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা আইএমও সচিবালয়ে একটি বাংলাদেশি জাহাজের রেপ্লিকা উপস্থাপন করেন। ১৯৭৬ সালে আইএমওতে বাংলাদেশ সদস্যপদ লাভের পর থেকে এই প্রথম নৌপরিবহন উপদেষ্টার উদ্যোগে আইএমও সদর দপ্তরে বাংলাদেশি রেপ্লিকা জাহাজ স্থাপন করা হলো। রেপ্লিকা জাহাজের মডেলটি তৈরি করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা আইএমও মহাসচিবের সাথে তার কার্যালয়ে দেখা করে পরিবেশবান্ধব শিপিং, বিকল্প জ¦ালানি এবং প্রযুক্তি বিনিময়ের সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।
বর্তমানে ২০২৩-২০২৫ সালের জন্য আইএমও কাউন্সিলে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ একটি নিরাপদ, সবুজ এবং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামুদ্রিক ভবিষ্যৎ এগিয়ে নেওয়ার জন্য আসন্ন নির্বাচনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অব্যাহত সমর্থন কামনা করে। এ সময় বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আইএমওর কনভেনশন বাস্তবায়ন, ডিজিটালাইজেশন এবং নারীর অংশগ্রহণসহ নানা উন্নয়ন, অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরেন তিনি।
সমুদ্র দূষণ রোধে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি প্লাস্টিক বর্জ্যে বাংলাদেশের নদী দূষণ ঠেকাতে আইন পরিবর্তন করে কঠোর করার পরিকল্পনার কথাও জানান।
