উন্নয়নের কথা বলে নদী দখল করা যাবে না: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

0
103

নদী দখলের বিরুদ্ধে সরকারের শক্ত অবস্থানের কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্‌মুদ চৌধুরী এমপি। গত ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকা-বরিশাল নৌপথের চাঁদপুরস্থ লক্ষ্মীরচর-আলুরবাজার-ঈশানবালা- হিজলা-উলানিয়া-মিয়ারচর রুট পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র, অর্থনৈতিক অঞ্চল বা অন্য কোনো উন্নয়নের কথা বলে নদী দখল করা যাবে না। আমরা নদীর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করছি। ব্যবসায়িক স্থাপনাকে ঘিরে কেউ নদীর জায়গা দখল করতে চাইলে তা কখনই গ্রহণযোগ্য হবে না। বিদ্যুৎকেন্দ্র বিদ্যুৎকেন্দ্রের জায়গায়, অর্থনৈতিক অঞ্চল অর্থনৈতিক অঞ্চলের জায়গায় আছে। কিন্তু যখন এটা নদীর জায়গায় আসবে তখনই সমস্যা।

আগের ছোট ছোট লিংক নৌপথ আবার সচল করা সম্ভব হবে জানিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, অতিরিক্ত স্রোত ও পলি জমার কারণে নদী ভরাট হয়ে বরিশাল রুটের মিয়ারচরেও নৌপথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন আমাদের ভোলার ইলিশা দিয়ে ঘুরে বরিশাল যেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় আলুবাজার থেকে হিজলা হয়ে নৌপথ করা যায় কিনা সেটা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে দুটি সভা করেছি। কিভাবে ড্রেজিং করলে নৌ চলাচল করতে পারবে সভায় আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা সর্বশেষ সার্ভে রিপোর্টে আশ্বস্ত হয়েছি, আগে যেসব ছোট ছোট লিংক নৌপথ ছিল, সেগুলো সচল করতে পারি।

তিনি বলেন, আমরা ঢাকা-বরিশাল নৌপথের মিয়ারচর, কালীগঞ্জ ও আলুবাজার-এই তিন চ্যানেলের কোনো নৌরুটই বাদ দিচ্ছি না। মিয়ারচরে যে পথটা আছে তা আমরা ড্রেজিং করে চালু করব। পাশাপাশি আলুবাজার চ্যানেলটিও চালু রাখতে চাই। আমরা ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বহুমাত্রিক পথ (লিংক) রাখতে চাই। কারণ কোনো কারণে যদি প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, তাহলে আমরা যেন বিকল্প পথ ব্যবহার করতে পারি। সেই জন্য সব পথ চালু করতে চাই।

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটে ফেরি চলাচলে সমস্যার বিষয়ে খালিদ মাহ্‌মুদ চৌধুরী বলেন, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ফেরি রুটটি যেহেতু পদ্মা সেতুর কাছাকাছি তাই বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষে ড্রেজিং করার সুযোগ নেই। আমরা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এখন পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ ড্রেজিং করছে। আমাদের ১০টি ড্রেজার কাজ করছে। কিন্তু আমরা যখন নৌপথ তৈরি করছি, তখন শিমুলিয়ায় আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। এটাও আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। কাজেই এখানে বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে বিআইডব্লিউটিসির কোনো সমন্বয়হীনতা নেই। যখনই পথ তৈরি হবে তখনই ফেরি চালু হবে। এখানে আমাদের নৌপথের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর বিষয়ে। পদ্মা সেতুর কার্যক্রম বিঘ্নিত করে, পদ্মা সেতুকে ঝুঁকিতে ফেলে আমরা এরূপ কোনো পথ তৈরি করতে চাই না।

প্রতিমন্ত্রী পরে হিজলা লঞ্চঘাটে হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিএ’র সদস্য (পরিচালন ও পরিকল্পনা) মো. দেলোয়ার হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আবদুল মতিন, পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) কাজী ওয়াকিল নেওয়াজ, পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা  বিভাগ) মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here