বিশ্বে যে ২৪২টি দীর্ঘতম নদী আছে তার মাত্র ৩৭ শতাংশ স্বাভাবিক ধারায় প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। বাকি নদীগুলোর বেশির ভাগই আর্কটিক, অ্যামাজন ও কঙ্গো বেসিনের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
মুক্ত নদীর অবস্থান ও ব্যাপ্তি নিয়ে এটাই এ ধরনের প্রথম মূল্যায়ন। নির্বিচার বাঁধ ও জলাধার তৈরির ফলে নদীর গুরুত্ব কত দ্রুত হারে কমছে সেই চিত্রই উঠে এসেছে গবেষণায়। গবেষণার তথ্য বলছে, এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ যে ৯১টি নদী আছে তার মধ্যে মাত্র ২১টি এখন পর্যন্ত উৎসের সাথে সমুদ্রের সংযোগ ধরে রাখতে পেরেছে।
কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক গুন্টার গ্রিল বলেন, মানুষ এবং পরিবেশ উভয়ের জন্যই মুক্ত নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। যদিও বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগুলোকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। স্যাটেলাইট ইমেজ ও অন্যান্য ডাটার সাহায্যে আমরা এসব নদীর ব্যাপ্তি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিস্তারিত দেখিয়েছি।
গবেষকরা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, বিশ্বব্যাপী ৬০ হাজার বড় আকারের বাঁধ রয়েছে। এর বাইরে ৩ হাজার ৭০০টি হাইড্রোপাওয়ার বাঁধের নির্মাণকাজ চলছে অথবা নির্মিত হয়েছে। তবে গোটা অঞ্চলজুড়ে এর প্রভাব কি সেটা যাচাই করা বেশ দুরূহ কাজ। কারণ প্রায় সময়ই এগুলোর পরিকল্পনা করা হয় পৃথক প্রকল্প হিসেবে। নির্মাণও হয় সেভাবেই।
গবেষণায় তারা পরিষ্কারভাবে যেটা বলতে চেয়েছেন, তা হলো নদীর সংযোগে বিঘ্ন ঘটানোর অর্থ হলো জটিল বাস্তুতন্ত্র যেমন মাছের মজুদ এবং বন্যা ও খরার প্রভাব হ্রাস সক্ষমতাকে কমিয়ে দেওয়া বা ধ্বংস করা।