ব্রহ্মপুত্র নদে চীনের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নদের পানি প্রবাহের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতের পানিসম্পদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্রহ্মপুত্র ও বরাক নদ উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল।
সংসদীয় প্যানেলের পক্ষ থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ নিয়ে চীনের কার্যক্রমের ওপর নজর রাখার সুপারিশ আসার পর গত ২২ আগস্ট এই ঘোষণা দেন সনোয়াল। ব্রহ্মপুত্রের ওপর চীনের বাঁধ নির্মাণ পরিকল্পনায় আসামের নাগরিকরাও এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
উত্তর-পূর্ব ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্রহ্মপুত্রের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে সনোয়াল বলেন, ব্রহ্মপুত্র ও বরাক নদ উন্নয়নে আমরা একাধিক উদ্যোগ নিচ্ছি। ব্রহ্মপুত্র ও বরাক পুরো উত্তর-পূর্ব ভারতজুড়ে বিস্তৃত প্রধান নদী এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ।
আন্তর্জাতিক নদ ব্রহ্মপুত্রের ৫৬ শতাংশ পড়েছে চীনা ভূখণ্ডে। ইয়ারলাং সাঙ্গপো নামে পরিচিত নদীটিতে বৃষ্টি হয় বছরে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ১০০ মিলিমিটার।
ব্রহ্মপুত্র নদ নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে কোনো চুক্তি নেই বলে আগস্টের গোড়ার দিকে জানায় সংসদীয় প্যানেল। তবে ব্রহ্মপুত্র ও সুতলেজ নদী নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা পাঁচ বছরের জন্য প্রযোজ্য এবং নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে। পানিসম্পদ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির আশঙ্কা, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ফলে পানির প্রবাহ বদলে দেওয়া নাও হতে পারে। এর মাধ্যমে পানি ধরে রেখে সুবিধাজনক সময়ে তা ছেড়ে দেওয়া হতে পারে, যার মারাত্মক প্রভাব পড়বে ব্রহ্মপুত্রের পানিপ্রবাহে। ফলে বিঘ্নিত হতে পারে পানিসম্পদ নিয়ে ভারতের উদ্যোগ। কারণ, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশ উভয়ের পানি নিরাপত্তার জন্যই ব্রহ্মপুত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।