সবাই যখন গঙ্গা দূষণ মারাত্মক রূপ নিয়েছে বলে জানাচ্ছে, তখন ভিন্ন ধরনের তথ্য হাজির করেছে ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইআইটি-কানপুরের গবেষকরা। তাদের মতে, যতটা খারাপ বলা হয়, গঙ্গার সার্বিক রসায়ন ঢের ভালো, নিদেনপক্ষে বিষাক্ত ভারী ধাতুর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে।
বেশির ভাগ গবেষণায় গঙ্গা নদীর বিষয়টি তুলে ধরা হয় তুলনামূলক সহজ পদ্ধতি পানির মানের ভিত্তিতে। এগুলো হলো পানিতে বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (বিওডি) ও কেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (সিওডি) এবং ডিজলভড অক্সিজেন (ডিও), পিএইচ। কিন্তু আইআইটি-কানপুরের গবেষকরা গঙ্গার দূষণের মাত্রা পরিমাপে দ্রবীভূত ট্রেস এলিমেন্ট ও বিষাক্ত ভারী ধাতুর তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। এজন্য তারা ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালের বর্ষার আগে, বর্ষার পরে ও বর্ষাকালে গঙ্গা অববাহিকার নির্ধারিত ৩৮টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহের পর ট্রেস এলিমেন্টের পরিমাণ বিশ্লেষণ করেন। কেন্দ্রীয় আর্থ সায়েন্স মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি এ কাজে তাদের সহায়তা দেয় ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপক্ষীয় সংস্থা ইন্দো-ইউএস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফোরাম। গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন জিওকেমিস্ট্রি, জিওফিজিক্স, জিওসিস্টেমসে প্রকাশ করে।
গবেষণায় দ্রবীভূত ট্রেস মেটালের পরিমাণ শিল্পাঞ্চল ও বৃহৎ শহরগুলোর আশপাশের এলাকার চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে হিমবাহর কাছাকাছি এলাকায়। এছাড়া দূষণের যেসব হটস্পট বিদ্যমান, সেগুলোও নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
আইআইটি-কানপুরের ডিপার্টমেন্ট অব আর্থ সায়েন্সেসের সহকারী অধ্যাপক ইন্দ্র সেনের ভাষায়, দূষণের হটস্পট নির্ধারণে সব গবেষণাই বর্জ্য নির্গমনের স্থান, বৃহৎ শহর ও স্নান ঘাটকে বেছে নেয়। কিন্তু এতে পানির সার্বিক রসায়নের চিত্র পাওয়া যায় না। অধিকন্তু অতিরঞ্জিত তথ্য উঠে আসে, যা অনেকটা পক্ষপাতদুষ্ট।