বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

বুধবার, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
18 C
Dhaka

বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

যমুনা নদী অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়ন পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে

নদীটির উৎপত্তি চীনে সাংপো নামে। ভারতে প্রবাহিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র হিসেবে। বাংলাদেশে প্রবেশের পর বইছে উত্তর থেকে দক্ষিণে। বঙ্গোপসাগরের জলে মিশে যাওয়ার আগে মিলিত হয়েছে পদ্মা ও মেঘনায়। নদীটি আমাদের যমুনা; চরোৎপাদী নদীর এক ধ্রুপদী উদাহরণ। যমুনার অববাহিকায় বাস করা শতকরা পঞ্চাশ ভাগ পরিবার প্রত্যক্ষ, কি অ-প্রত্যক্ষে নদী-সংসারটির সাথে যুক্ত নিজেদের জীবিকার কারণে। কখনো চাষবাসের প্রয়োজনে। কখনো আবার যোগাযোগের তাগিদে। জীববৈচিত্র্যেরও সমৃদ্ধ আধার এটি। অর্থাৎ, যমুনার অর্থনৈতিক গুরুত্ব অসীম। কিন্তু চরোৎপাদী ধরনের কারণে যমুনার ভাঙন অন্য সব নদীর চেয়ে বেশি। বর্ষায় সে ভাসিয়ে নিতে চায় বাস্তু, ফসল; মানুষের জীবিকা। আবার শুষ্ক মৌসুমে সে বড্ড রুখাশুখা। নৌযান চলাচলের প্রয়োজনীয় গভীরতাটুকুও থাকে না। ভাঙন ও বন্যাকে নিয়ন্ত্রণে এনে যমুনার নাব্যতা কীভাবে বাড়ানো যায় সেই কর্মসূচিই হাতে নিয়েছে সরকার, যার পোশাকি নাম ‘যমুনা নদী অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়ন’। সমীক্ষা বলছে , বড় বিনিয়োগের এই কর্মসূচির অর্থনৈতিক রিটার্নও বড়। শুধু রপ্তানিই বাড়বে বছরে তিন হাজার কোটি ডলার। ব-দ্বীপ পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে তিন পর্যায়ে তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য এই কর্মসূচির অন্যতম অংশীদার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নেভিগেশনাল চ্যানেল উন্নয়নের দায়িত্ব তাদেরই। কেমন হবে সেই কাজ, সম্ভাব্য ফলাফলই বা কী হবে? সেসব নিয়েই ‘নদীবাংলা’র এই সংখ্যার প্রধান রচনা।

নদীমাতৃক দেশ হওয়ার সুবাদে আমাদের নদী পর্যটনের সম্ভাবনা বিশাল ও বিপুল। এই সম্ভাবনাকে সম্ভবে পরিণত করার সুযোগ করে দিয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম রিভার ক্রুজ ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’। বিদেশি পর্যটক নিয়ে বিলাসবহুল জাহাজটি তার ৫১ দিনের ভ্রমণে বাংলাদেশে কাটিয়েছে ১৫ দিন। পর্যটকরা উপভোগ করেছেন এখানকার নদীর সৌন্দর্য, বিশ্বে ঐতিহ্য সুন্দরবনের বিশালত্ব। ঐতিহাসিক স্থাপনার পাশাপাশি এখানকার মানুষের কৃষ্টি-কালচারের সাথেও পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এসবই খবর হিসেবে স্থান পেয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্থান করে নিয়েছে নদী পর্যটনের বৈশ্বিক মানচিত্রে। এ নিয়ে থাকছে একটি বিশেষ রচনা।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে দীর্ঘ ৩০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, (জি), এনইউপি, এনডিসি,এএফডাব্লিউসি , পিএসসি। তিনি কেবল রুটিন দায়িত্বে আটকে থাকতে চান না। কর্তৃপক্ষকে অগ্রবর্তী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এগিয়ে নিতে প্রাগ্রসর ভাবনার প্রয়োগ ঘটাতে চান; সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতায়, তাঁদেরকে সাথে নিয়ে। তাঁকে স্বাগত জানিয়ে থাকছে একটি রচনা।

এ ছাড়া নিয়মিত আয়োজন হিসেবে বরাবরের মতো এবারও থাকছে ‘প্রযুক্তি’ বিভাগ। সংক্ষিপ্ত কলেবরে এবারও আমরা তুলে এনেছি আমাদের নদী ও আমাদের বন্দরের কথা। পরিভ্রমণ করেছি দূর অতীতে, আমাদের ঐতিহ্যে। সেই সাথে থাকছে দেশ-বিদেশের নদী ও নৌখাত নিয়ে সবশেষ ঘটনাপ্রবাহের কথা ও ছবি।

প্রিয় পাঠক, আশা করি আমাদের এই প্রয়াস নদী ও নৌপথ নিয়ে আপনার জিজ্ঞাসার উত্তর দেবে। কিছুটা হলেও নতুন ভাবনার খোরাক জোগাবে। আপনার মূল্যবান মতামত, মন্তব্য ‘নদীবাংলা’র পথচলা আরও এগিয়ে নেবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here