বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
17 C
Dhaka

বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

নদী আমাদের অস্তিত্বের স্মারক, ঐতিহ্যের ধারক

নদী আমাদের অস্তিত্বের স্মারক, ঐতিহ্যের ধারক। আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বুনিয়াদ। নদী ও নদীকেন্দ্রিক সব কর্মকাণ্ডকে মলাটবদ্ধ করার প্রয়াস এই সাময়িকী।

ছাপার অক্ষরে নদী ও নৌপথের ছবি পাঠকের সামনে তুলে ধরার যে প্রয়াস, তা এবার একটা অবয়ব পেল। প্রকাশিত হলো নদীকে ধারণ করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) দ্বিমাসিক সাময়িকী ‘নদীবাংলা’। বাংলার নদ-নদীর সুবিশাল গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার জন্মশতবর্ষে এসে এমন একটা প্রকাশনা পাঠকদের হাতে তুলে দিতে পারায় আমাদের জন্য মুহূর্তটা ভিন্ন রকমের, ভিন্ন আবহের। খানিকটা উদযাপনেরও। এই উদযাপন আগ্রহী পাঠকদের তাদের আগ্রহের জগতে পরিব্রাজনের সুযোগ করে দেওয়ার। অনাগ্রহী পাঠকদের মধ্যেও খানিকটা আগ্রহ জাগানোর চেষ্টার। আমাদের এই যৎসামান্য প্রচেষ্টায় সব পাঠককে স্বাগতম। সাথে অনিঃশেষ শুভেচ্ছা।

নদী কেন? এ নিয়ে প্রকাশনারই বা উদ্দেশ্য কী? উত্তরটা স্রোতস্বীনি নদীর জলরাশির মতোই সুপ্রকাশিত। নদী আমাদের অস্তিত্বের স্মারক, ঐতিহ্যের ধারক। আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বুনিয়াদ। নদী তার অফুরান সম্পদ দিয়ে ঋদ্ধ করে অর্থনীতিকে। ধারণকৃত জল দিয়ে সতেজ করে কৃষিকে; সবলতা দেয় শিল্পকে। তাই নদী ও নদীকেন্দ্রিক সব কর্মকাণ্ডকে মলাটবদ্ধ করার প্রয়াস এই সাময়িকী।

ঐতিহাসিকভাবেই যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সবচেয়ে প্রাচীন, নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী মাধ্যম নৌপথ। অভ্যন্তরীণ নৌপথের সেই ঐতিহ্যে কিছুটা মলিনতা এসেছে। সারাদেশে ২৪ হাজার কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ নৌপথ থাকলেও নৌযান চলাচলের উপযোগী নাব্যতা থাকে সর্বোচ্চ ছয় হাজার কিলোমিটারে। তাই বলে মাধ্যম হিসেবে অভ্যন্তরীণ নৌপথের চাহিদায় ভাটা পড়েনি। বরং চাহিদা আরও বাড়াতে অভ্যন্তরীণ নৌপথের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়বস্তু হিসেবে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন খাত এই সাময়িকীর কেন্দ্রভাগে থাকার দাবিদার। আমাদের উদ্বোধনী সংখ্যার প্রধান রচনার বিষয়বস্তুও নির্বাচন করা হয়েছে নদী খনন বা ড্রেজিং।

নৌ সম্পদের সর্বোচ্চ সুফল ঘরে তুলতে নদীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার বিকল্প নেই। অর্থাৎ নৌ সম্পদ আহরণ করতে হবে নদী ও নৌপথের পরিবেশ অটুট রেখেই। কিভাবে সেটা সম্ভব সেই আলোচনা আমরা রাখছি আমাদের নিয়মিত আয়োজন হিসেবে। জনজীবন ও অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিসরে অবদান রেখে চলেছে প্রধান প্রধান নদী ও নদীবন্দরগুলো। এইসব নদী ও বন্দরকে আমরা নতুন করে পাঠকদের সামনে হাজির করছি ভিন্নভাবে। নদী ও এর সম্পদ ব্যবহারে প্রযুক্তি কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে নিয়মিত আয়োজন হিসেবে সাময়িকীর পাতাজুড়ে থাকছে সেই বয়ানও। বিশাল সমুদ্র অর্থনীতির বিপুল সম্ভাবনার টেকসই অর্জন সরকারের অন্যতম প্রাধিকার। অভীষ্টায় বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ বাস্তবায়নও। এসব নিয়ে আনুপুঙ্খিক বিশ্লেষণ তুলে ধরতে চায় ‘নদীবাংলা’। থাকছে নদী ও অভ্যন্তরীণ নৌপথ নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালার সচিত্র খবরও।

অনাদিকাল থেকেই এই অঞ্চলের নদ-নদী অনবরত স্রোতধারা বদলেছে। বদলের এই পরিক্রমায় নদীকে আশ্রয় করে গড়ে উঠেছে অনেক নগর, বন্দর, বসতি। পরিবর্তনের এই ধারায় অনেক লোকালয়, শহর, নগর হারিয়েও গেছে। নদীকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠা ক্ষয়িষ্ণু বা হারিয়ে যাওয়া সেইসব ঐতিহ্যের দিকেও ফিরে তাকাতে চাই আমরা। আমাদের দেখার এই দৃষ্টি কেবল অভ্যন্তরীণ নদী, নৌপথ ও নৌ সম্পদে আটকে রাখতে চাই না। এক চোখে অভ্যন্তরীণ নদীকে দেখলে অন্য চোখ রাখতে চাই আন্তর্জাতিক নদীতে। এসব কিছুই থাকছে সাময়িকীর পাতায় পাতায় ভিন্ন শিরোনামে, ভিন্ন আঙ্গিকে, তবে একই ভঙ্গিতে।

প্রিয় পাঠক, আশা করি আমাদের এই প্রয়াস নদী নিয়ে আপনার জিজ্ঞাসার উত্তর দেবে। নতুন ভাবনার খোরাক জোগাবে। এই যাত্রায় আপনাদের সঙ্গ আমাদের একান্ত কাম্য। আপনার মূল্যবান মতামত, মন্তব্য সমৃদ্ধ কলেবরে ‘নদীবাংলা’র পথচলা এগিয়ে নেবে। আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। সবাইকে আবারও শুভেচ্ছা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here