নিবিঘ্নে পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতে সরকার বাংলাদেশের নৌপথের উন্নয়নে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ৫৫তম ব্যাচের মুজিববর্ষ গ্র্যাজুয়েশন প্যারেডে বক্তৃতাদানকালে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে নৌপথ আরও উন্নত করতে কাজ করছি আমরা। যাতে করে নিবিঘ্নে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে পণ্য পরিবহন নিশ্চিত হয়। এদিকটাতে আমরা বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছি।’
বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। তাছাড়া আমাদের বিশাল সমুদ্রও আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালেই সমুদ্রসীমা আইন প্রবর্তন করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫-পরবর্তী সরকারগুলো এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিইনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে এটি। তাছাড়া আমাদের বঙ্গোপসাগর খুবই গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। অনেক বৈশ্বিক বাণিজ্য এখান দিয়েই সম্পন্ন হয়।’
পাসিং আউট ক্যাডেটদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রচারণ বিষয়টা বেশ চ্যালেঞ্জিং, খুব কঠিন একটা দায়িত্ব। কিন্তু দায়িত্বটা পালন করার মতো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তোমরা কর্মক্ষেত্রে যোগ দেবে। জাতির পিতার হাতেগড়া এই প্রতিষ্ঠানটি প্রায় মুমূর্ষু আবস্থায় তাঁর সরকার পেয়েছিল। তা উন্নত করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচিও তাঁর সরকার বাস্তবায়ন করছে।
বিগত ১০ বছরে এই একাডেমির শিক্ষাদান ট্র্যাডিশনাল থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুক্তরাজ্য মার্চেন্ট নেভি ট্রেনিং বোর্ডের স্বীকৃতিসহ অর্জিত হয়েছে নানাবিধ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। একাডেমির নটিক্যাল প্রশিক্ষণকে উন্নততর করার লক্ষ্যে ২০১৯ সালে একাডেমিতে স্থাপন করা হয়েছে ‘নেভিগেশন সিমুলেটর’। এ বছরই উন্নততর মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রশিক্ষণের স্বার্থে ‘ইঞ্জিন কন্ট্রোল সিমুলেটর’ স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অর্থাৎ এই একাডেমিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ আমরা দিতে যাচ্ছি যাতে আমাদের ক্যাডেটরা দেশে ও বিদেশে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী এমপি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানে পাসিং আউট ক্যাডেটদের মাঝে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণ পদক এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন পদক প্রদান করেন।