নদীমাতৃক বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নৌপথের উন্নয়নের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক। ১৮ নভেম্বর বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জস্থ স্থাপনা, ড্রেজিং কার্যক্রমসহ সার্বিক কর্মকা- পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান বলেন, সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ পরবর্তী স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব নেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বঙ্গবন্ধু সর্বপ্রথম যোগাযোগ
ব্যবস্থাকে সচল করার উদ্যোগ নেন। তুলনামূলক সাশ্রয়ী ও সহজ যোগাযোগ মাধ্যম নৌপথ উন্নয়নের রূপরেখা প্রণয়ন করেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তিনি নিজ হাতে রাখেন এবং বাংলাদেশের জন্য সর্বপ্রথম সাতটি ড্রেজার সংগ্রহ করেন, যেগুলো এখনো সচল রয়েছে ও ড্রেজিং কাজে ব্যবহার হচ্ছে। ১৯৭৫ পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত নৌপথের উন্নয়নে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। নতুন কোনো ড্রেজারও সংগ্রহ করা হয়নি। বরং এ সময়ে দেশের নৌপথ দূষণ, দখল, নাব্যতা হ্রাসসহ নানা কারণে সংকুচিত হয়ে নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ ও ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে পুনরায় নৌপথের উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন এবং নৌপথ উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেন; যার মধ্যে রয়েছে রূপকল্প ২০২১, রূপকল্প ২০৪১ এবং বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০। নৌপথের উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নদীর নাব্যতা ফেরানো, নদী দখল এবং দূষণ রোধ করে নদী তীরবর্তী এলাকার সৌন্দর্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বর্তমান সরকার ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সারা দেশে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে জানিয়ে কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যেই প্রায় ২ হাজার ২০০ কিলোমিটার নৌপথ খনন করা হয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি ড্রেজারের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী খননকাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার বহরে বর্তমানে ৪৫টি ড্রেজার রয়েছে। আরো ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলমান আছে। এছাড়া বর্তমান সময়ের চাহিদা বিবেচনায় দক্ষ নৌকর্মী তৈরিতে বরিশাল ও মাদারীপুরে নৌ-প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এজন্য প্রশিক্ষণ জাহাজ সংগ্রহ করা হয়েছে, যা প্রশিক্ষণকাজে ব্যবহার হবে।