বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
16 C
Dhaka

বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

নৌ প্রটোকলের আওতায় প্রতিবছরই বাড়ছে পণ্য পরিবহন। এ প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশি নৌযানের হিস্যাই প্রধান

প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় বাণিজ্যলক্ষ্মীর যে গমনাগমন তা সুদীর্ঘ, সুপ্রশস্ত, বহুজনপদ পেরোনো নৌপথ বেয়েই। সড়ক যোগাযোগের সুবিধা যখন অপ্রশস্ত এবং রেল যোগাযোগের ধারণাটি বাষ্পীয় তখনো বাংলায় পণ্য বাণিজ্যের প্রায় সবটাই হতো জলপথে। পূর্ববঙ্গের অভ্যন্তরে তো বটেই কলকাতা বা আসামের সাথে মনুষ্য যাতায়াতের মাধ্যমও ছিল গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের ঢেউ ভেঙে ছুটে চলা স্টিমার। ’৪৭-এর দেশভাগের পরও চালু ছিল এই যাতায়াত। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর তাতে ছেদ পড়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ১৯৭২ সালে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ও বাণিজ্য প্রটোকল (পিআইডব্লিউটিঅ্যান্ডটি) স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া আন্তঃদেশীয় নৌপথের পুনর্জাগরণ ঘটলেও ’৭৫-পরবর্তী সময়ে তা অনেকটা কাগুজে চুক্তিতে পরিণত হয়। ২০০৯ সালের পর নতুন সঞ্জীবন আসে নৌ প্রটোকলে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়নের সুযোগ রেখে ২০১৫ সালে প্রটোকল চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য বর্ধিত করা হয়। দুই দফা সংযোজনীর মাধ্যমে প্রটোকলে নতুন রুট যেমন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, একইভাবে বেড়েছে পোর্ট অব কলের সংখ্যাও।

শুধু আমদানি পণ্য পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার না করে দাউদকান্দি-সোনামুড়া প্রটোকল রুট দিয়ে ২০২০ সালে ত্রিপুরায় পরীক্ষামূলক পণ্য রপ্তানিও হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রটোকল রুট দিয়ে পণ্য গেছে আসামেও। আরও উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো প্রটোকল রুট ব্যবহার করে ভারতে খাদ্যপণ্যও রপ্তানি হয়েছে গত বছর। এসবই আশার খবর। কিন্তু সম্ভাবনা আরও ব্যাপক। এ সম্ভাবনার ফসল ঘরে তুলতে প্রয়োজন নৌপথকে সারা বছর নৌ চলাচলের উপযোগী নাব্য রাখা এবং আমদানির পাশাপাশি রপ্তানি পণ্যের পরিবহনও নিয়মিত করা। নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সেই চেষ্টাই নিষ্ঠার সাথে নিরন্তর করে চলেছে, যা প্রটোকলের সুফল নিয়ে আমাদের আশাবাদী করে তুলছে। সেগুলোই আমরা বলার চেষ্টা করেছি এ সংখ্যার প্রধান রচনায়।

নৌ দুর্ঘটনার ধরন-ধারণ ও কারণ, প্রতিকারের অনুপুঙ্খ বর্ণনা উঠে এসেছে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন, (সি), পিসিজিএম, এনডিসি, পিএসসি, বিএন-এর সাথে আলাপচারিতায়। আলাপচারিতায় ভ্রমণ করে নিরাপদ নৌ চলাচলের শর্তযুক্ত একটা ছবি যে অংশীজনেরা পাবেন, সে কথা বলাই যায়।

নিয়মিত আয়োজন হিসেবে এ সংখ্যায়ও থাকছে ‘প্রযুক্তি’ বিভাগ। সংক্ষিপ্ত কলেবরে এবারও আমরা তুলে এনেছি আমাদের নদী ও আমাদের বন্দরের কথা। পরিভ্রমণ করেছি দূর অতীতে, আমাদের ঐতিহ্যে। সেই সাথে থাকছে দেশ-বিদেশের নদী ও নৌ খাত নিয়ে সবশেষ ঘটনাপ্রবাহের কথা ও ছবি।

প্রিয় পাঠক, আশা করি আমাদের এই প্রয়াস নদী ও নৌপথ নিয়ে আপনার জিজ্ঞাসার উত্তর দেবে। কিছুটা হলেও নতুন ভাবনার খোরাক জোগাবে। আপনার মূল্যবান মতামত, মন্তব্য ‘নদীবাংলা’র পথচলা এগিয়ে নেবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here