চীনের ইয়াংজি নদী অববাহিকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবাহগুলোতে ১০ বছরের জন্য মাছ ধরার যে নিষেধাজ্ঞা তার সুফল মিলতে শুরু করেছে। জলজ প্রাণী ধীরে ধীরে ফিরে আসার মাধ্যমে বাস্তুতান্ত্রিক উন্নতি এরই মধ্যে চোখে পড়ছে বলে জানিয়েছে দেশটির কৃষি ও গ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
‘জায়ান্ট পান্ডা অব ওয়াটার’ খ্যাত পাখাবিহীন ডলফিন এখন পয়াং ও ডংটিং হ্রদ এবং ইয়াংজি নদীর ভাটিতে নিয়মিতই দেখা দিচ্ছে। ইয়াংজি নদীর জিয়ানলি অংশে চীনের কার্পজাতীয় মাছের প্রধান চারটি প্রজাতি বø্যাক কার্প, গ্রাস কার্প, সিলভার কার্প ও বিহেড কার্প এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ডিম দিচ্ছে। প্রজনন মৌসুমে এইসব প্রজাতির ডিম দেওয়া ১০ কোটি থেকে বেড়ে ৭৮৭ কোটিতে উন্নীত হয়েছে।
কৃষি ও গ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী ট্যাং রেনজিয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০২২ সালে ইয়াংজিতে অবৈধভাবে মাছ ধরার ১৮ হাজার ৫২৫টি ঘটনা তদন্ত করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে ৩ হাজার ৪৬২টি ঘটনা আদালতে পাঠানো হয়েছে। আগে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ও অন্যান্য সহযোগিতা দেওয়ার ব্যাপারে গৃহীত নীতি স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলো বাস্তবায়ন করে যাবে। সেই সাথে মাছ ধরা নিষিদ্ধের কারণে দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের পর্যালোচনায় রাখার পাশাপাশি সময়োপযোগী সহায়তা প্রদানও অব্যাহত রাখবে তারা।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সুযোগ থাকলে নীতি সহায়তা বাস্তবায়ন ও কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইয়াংজি নদী এলাকায় মৎস্যচাষ, পর্যটন ও অন্যান্য শিল্পও গড়ে তোলা হবে।
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইয়াংজি নদী অববাহিকার ৩৩২টি সংরক্ষণ এলাকায় মাছ ধরা পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করে চীন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ইয়াংজির প্রধান প্রধান প্রবাহ ও শাখা নদীগুলোতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ১০ বছর বর্ধিত করা হয়।
এদিকে ইয়াংজি নদী রক্ষা ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণে ১ হাজার ৪৫১ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (সিডিবি)। এই অর্থায়নে গৃহীত প্রকল্পের অধীনে ইয়াংজি বরাবর বর্জ্য পরিশোধন সক্ষমতা দৈনিক ৩৯ লাখ ৪০ হাজার টন বাড়ানো হবে। সেই সাথে ১ হাজার ২০৫ কিলোমিটার নদী নিয়ন্ত্রণ ও খনন করা হবে।
খবর: চায়না ডেইলি