বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান বিজয় দিবসের আলোচনায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদন করে দেশ গড়ায় অংশীদার হওয়ার আহবান জানান।
ভোরের আলো ফুটতেই বিআইডব্লিউটিএ ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীতের সুর। সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন। পরে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা। বার্তা একটাই – মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ গড়ায় অংশীদার হওয়ার অঙ্গীকার। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রধান কার্যালয়ে ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে এভাবেই মহান বিজয় দিবস উদ্যাপিত হয়। প্রধান কার্যালয়ের পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ নিয়ন্ত্রিত সব নদীবন্দর এবং প্রতিষ্ঠানেও এদিন নানা আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদ্যাপিত হয়।
প্রধান কার্যালয়ের আয়োজন

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ১৬ ডিসেম্বর প্রত্যুষে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) জনাব মোহাম্মদ মনোয়ার উজ জামান, সদস্য (অর্থ) ক্যাপ্টেন (অব.) মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগ) জনাব কাজী ওয়াকিল নওয়াজ, প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) ও বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব রকিবুল ইসলাম তালুকদার এবং পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) ও বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জনাব এ, কে, এম আরিফ উদ্দিন। কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণের পাশাপাশি আরও উপস্থিত ছিলেন মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক, সদস্যসহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ।
উদ্যাপনের প্রথম পর্ব শেষে কর্তৃপক্ষের ৬ষ্ঠ তলায় কনফারেন্স কক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার প্রাক্কালে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত এবং মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করা হয়।

কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য আলোচক তাঁদের বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদন করে দেশ গড়ায় অংশীদার হওয়ার আহবান জানান।
বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল এদিন জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে।
নদীবন্দরগুলোর আয়োজন
মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে দেশের নদীবন্দরগুলোর দপ্তরে আগের দিনই আলোকসজ্জা করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন স্ব স্ব বন্দরের কর্মকর্তারা। পাশাপাশি একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলো এদিন নিজস্ব উদ্যোগে গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষদের মধ্যে খাবার বিতরণ করে।

বিজয় দিবসে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গী নদীবন্দর তাদের অধীনে থাকা বিনোদন কেন্দ্র/ইকোপার্কগুলো শিশুদের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিনা টিকিটে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। এগুলো হলো শ্যামপুর ইকোপার্ক, খানপুর ইকোপার্ক, টঙ্গী ইকোপার্ক এবং মিরপুর বড়বাজার ইকোপার্ক।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহে আয়োজন
বিআইডব্লিউটিএর অধীন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মহান বিজয় দিবস-২০২৪ উদ্যাপন করে। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালের ডেক ও ইঞ্জিন পার্সোনেল ট্রেনিং সেন্টার (ডিইপিটিসি) এবং মাদারীপুরের শিপ পার্সোনেল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (এসপিটিআই) এদিন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের ক্যাডেটদের মাঝে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

ড্রেজার বেইজগুলোও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার মাধ্যমে বিজয় দিবস উদ্যাপন করে। এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএর জাহাজসমূহ জাতীয় পতাকাসহ বিভিন্ন পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের জাহাজসমূহ সর্বসাধারণের দর্শনের সুযোগ করে দিতে নদীবন্দরগুলো প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে।
