শিল্পবর্জ্য নিক্ষেপে রাশ টানতে পোল্যান্ডের ব্যর্থতা ওডার নদীকে আরেকটি বড় ধরনের পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এমনটাই মনে করছেন পরিবেশবাদীরা। পোল্যান্ড ও জার্মান সীমান্তের নদীটিতে গ্রীষ্মে যে হাজার হাজার মাছের মৃত্যু তার জন্য সোনালী রঙের এক ধরনের শৈবালকে দায়ী করা হয়, যা মাছ ও শেলফিশের জন্য ক্ষতিকর বিষের নিঃসরণ ঘটায়।
বিপুল সংখ্যায় এই মাছ মরে যাওয়ার প্রকৃত কারণ এখনো চিহ্নিত করা না গেলেও জার্মান গবেষকরা এজন্য ওডার নদীর পোল্যান্ডের অংশে শিল্প-কারখানা থেকে অতিমাত্রায় লবণাক্ত পানি নিক্ষেপের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। ছয় মাস হয়ে গেলেও পোলিশ সরকার লবণাক্ত পানি নিক্ষেপ বন্ধ করতে বা এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে পারেনি। এর অর্থ হচ্ছে, নদীটির স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা এখন অনেক দূরের ব্যাপার। বরং আরেকটি বিপর্যয়ের নজির সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।
এ ঘটনার পর বার্লিনের লেইবনিজ-ইনস্টিটিউট অব ফ্রেশওয়াটার ইকোলজি অ্যান্ড ইনল্যান্ড ফিশারিজ ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে সমীক্ষা চালায়। তাতে দেখা যায়, আগের বছরগুলোর তুলনায় অর্ধেক মাছও ধরা পড়ছে না। এ ছাড়া যেসব মাছ ওডার নদীতে সচরাচর পাওয়া যায় তার অনেকগুলোরই দেখা মিলছে না।
নদীটির লবণাক্ততা আবারও অনেক বেড়ে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় গ্রীষ্মের মতোই লবণাক্ত হয়ে পড়েছে ওডার নদীর পানি। শিল্পবর্জ্য বন্ধ করার মধ্যেই এ সমস্যরা সমাধান রয়েছে বলে মনে করেন ডব্লিউডব্লিউএফের পোলিশ অফিসের নদীর বাস্তুতন্ত্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞ পিওতর নিয়েজনানস্কি। তাঁর ভাষায়, দূষণের উৎসের দিকে না তাকিয়ে কোনো কাজই নদীর বাস্তুতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট হবে না।
কিন্তু পোলিশ সরকার নিজেও প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আবার জার্মান কর্তৃপক্ষকেও সহযোগিতা করছে না। নদীর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে এটা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বার্জ পরিচালনার জন্য ওডার নদীকে অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রিত নৌপথে পরিণত করার ব্যাপারে পোল্যান্ডের পরিকল্পনাও নদীটির পুনরুদ্ধার হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। যদিও পোল্যান্ডের এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছে জার্মানি।
গ্রিন পার্টির এমইপি হান্নাহ নিউম্যান বলেন, ওয়ারশর একটি আদালত ওডার নদীতে সব ধরনের অবকাঠামো সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দিলেও বিনা বাধায় তা চলছে। পোল্যান্ডের আইন প্রকাশ্যেই লঙ্ঘিত হচ্ছে। অথচ এর পরিণতি দেখা যাচ্ছে না।
খবর: পলিটিকো