ব্রহ্মপুত্র নদে জাতীয় নৌপথ-২-এর উন্নয়নে ৪৬১ কোটি রুপি ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে ভারত সরকার। ২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে।
দেশটির বন্দর, জাহাজ চলাচল ও নৌপথ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৭২ কোটি ৬০ লাখ রুপি ব্যয়ে আসামের পান্ডু বন্দরে জাহাজ মেরামত কারখানা প্রতিষ্ঠা প্রকল্পের অন্যতম অঙ্গ। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জাহাজ মেরামতের কোনো ডকইয়ার্ড না থাকায় পান্ডুতে জাহাজ মেরামত কারখানা এ অঞ্চলকে বিশেষ সুবিধা এনে দেবে। বর্তমানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোনো জাহাজের ড্রাই ডক মেরামতের প্রয়োজন পড়লে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে কলকাতায় নিতে হয়।
জাতীয় নৌপথ-২-এ মাল্টিমোডাল নদীবন্দর উন্নয়নে পান্ডু বন্দর রয়েছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে। এ কারণেই পান্ডুতে টার্মিনাল উন্নয়নের একটি মহাপরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী উন্নয়ন কার্যক্রমও পরিচালিত হয়েছে। ৪০ কোটি ২ লাখ রুপি ব্যয়ে নির্মিত একটি লো-লেভেল জেটি ২০০৯ সালে কার্যক্রমে আসে। নদীবন্দরটিতে হাই-লেভেল জেটিটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৪৩ কোটি ৮৯ লাখ রুপি। কনটেইনারসহ যান্ত্রিক উপায়ে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের সুবিধাসংবলিত জেটিটি কার্যক্রমে আসে ২০১৪-১৫ সালে।
নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার (এনএফ) রেলওয়ের মধ্য দিয়ে পান্ডু বন্দর ও কামাক্ষা রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি ব্রড গেজ রেলওয়ে সাইডিং (স্বল্পদৈর্ঘ্যরে ট্র্যাক) নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। ২০১৩ সালে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য এটি চালু করে এনএফ রেলওয়ে। ব্রড গেজ সাইডিংটি ব্যবহার করে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে কার্গো পরিবহনের জন্য ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি অব ইন্ডিয়া এনএফ রেলওয়ের সাথে একটি চুক্তি করেছে। জাতীয় নৌপথ-১ ও ২-এর মধ্যে সংযোগ উন্নয়নে ইন্দো-বাংলা প্রটোকল রুট সারা বছর নাব্য রাখার যৌথ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইভাবে ইন্দো-বাংলা প্রটোকল রুটে নৌ-চলাচল সহজ করতে সুন্দরবনের মধ্যে জাতীয় নৌপথ-৯৭-এর উন্নয়ন করা হয়েছে।
বিদ্যমান ছয়টি পোর্টস অব কলের সাথে নতুন আরও সাতটি যুক্ত হওয়ায় এবং পিআইডবিøউটিঅ্যান্ডটির আওতায় আরও বিদ্যমান আটটি রুটের সাথে দুটি রুট যোগ হওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যে অভ্যন্তরীণ নৌপথে প্রবেশ বাড়বে। ফলে ভারতের জাতীয় নৌপথগুলোকে নৌ-চলাচল বৃদ্ধি পাবে।
ভুটানের কিছু রপ্তানিকারক পণ্য পরিবহনের বিকল্প মাধ্যম হিসেবে অভ্যন্তরীণ নৌপথের প্রস্তাব দিয়েছেন। সড়কের তুলনায় একসাথে বেশি পণ্য পরিবহনের সুবিধা ও স্বল্প ব্যয় এবং সড়কপথের জট এড়াতে এ প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। আইডবিøউএআইয়ের তত্ত¡াবধানে প্রথম চালানটি ২০১৯ সালে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবহার করে এই বাণিজ্য অব্যাহত থাকবে এবং সামনের বছরগুলোতে আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খবর : দ্য আসাম ট্রিবিউন