বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫
25 C
Dhaka

বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিত প্রকাশনা

অর্থনৈতিক উন্নয়নে টেকসই নদী খনন জরুরি

অর্থনীতিতে নদীপথের অবদান বাড়ানোর লক্ষ্যে নদীপথের অভিগম্যতা বৃদ্ধি ও টেকসই নদী খনন কার্যক্রম সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এজন্য জাতীয় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, ড্রেজিং কার্যক্রমে ব্যবহৃত ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানিতে বিভিন্ন ধরনের কর হ্রাস, নদী খনন ও ব্যবস্থাপনা সরকারের ফার্স্ট ট্র্যাক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আনার পাশাপাশি মানবসম্পদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

৩১ জুলাই ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘টেকসই নদী খনন : চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকার’ বিষয়ক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহামুদ চৌধুরী এমপি। বক্তৃতা করেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় সংসদ সদস্য মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের সহসভাপতি রবার্ট হেনেসি, ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ জাব্বার এবং ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের নির্বাহী পরিচালক আবু সালেহ খান। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও পানিবিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহামুদ চৌধুরী বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশকে রক্ষা করে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০ বছরের ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। নৌপথগুলো খননের মাধ্যমে নদীগুলোকে রক্ষা করা হবে। দেশ পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্ট অনুসরণ করে সফলকাম হব।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধু সাতটি ড্রেজার সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু ৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সে ধরনের কার্যক্রম আর চোখে পড়েনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে তিনটি, এরপর ১০টি এবং ২০টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছেন। আরো ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। সরকার ১০ হাজার কিলোমটিার নৌপথ খননের লক্ষ্যে কাজ করছে। ইতোমধ্যে ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার নৌপথ খনন করা হয়েছে।

যথাযথ নদী খনন কার্যক্রম বাস্তবায়নে মানবসম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি ও সমন্বিত নীতিমালার ওপর গুরুত্বারোপ করে সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, সরকার এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সারা দেশে নদী খনন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমাদের ৫০০টি ড্রেজারের প্রয়োজন হলেও রয়েছে ১৫৬টি। এমন বাস্তবতায় সরকারের পাশাপাাশি দেশের বেসরকারি খাতকেও এ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে।

ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, নদীপথে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য পরিবহনের সুবিধা থাকায় সুপ্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় নদীপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে ক্রমাগত পলি জমে নদীগুলোর গভীরতা হ্রাসের কারণে নদীপথ সংকীর্ণ হওয়ায় অর্থনীতি সে সুবিধা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় নদীপথের অভিগম্যতা বাড়াতে টেকসই নদী খনন ও ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত তার মূল প্রবন্ধে বলেন, ড্রেজিংয়ের ক্ষেত্রে টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে অর্থনীতি আরো উপকৃত হবে। তিনি মনে করেন বাংলাদেশের নদী ও খালসমূহের ড্রেজিংয়ের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন এবং এর সাথে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা আবশ্যক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here